0


জার্মানিতে উকিলরা খুবই অর্থবান। এক উকিল নতুন লেক্সাস গাড়ি কিনে তাঁর কলিগদের দেখানোর জন্য পার্ক করলেন একেবারে তাঁর চেম্বারের পাশে। যেই মুহূর্তে গাড়ি থেকে নামলেন, এক ট্রাক ড্রাইভার ঝট করে আঘাত দিল গাড়ির দরজায়। একটি দরজাই উড়িয়ে নিয়ে গেল। একেবারে নতুন গাড়ি। রাগে-দুঃখে খেপে গেলেন তিনি। পুলিশকে ফোন করলেন। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুলিশ সেখানে। পুলিশকে বললেন, ‘দেখেছেন, এই গর্দভ ট্রাক ড্রাইভার কী করেছে? আমার নতুন গাড়ির দরজা উড়িয়ে দিয়েছে। এমন গবেট, অপদার্থ! পুলিশ উকিল সাহেবকে থামানোর জন্য বললেন, ‘শান্ত হোন, শান্ত হোন। ট্রাক ড্রাইভার শুধু আপনার দরজাটি উড়িয়ে দেয়নি, দেখুন আপনার অর্ধেক হাত উড়ে গেছে।’
উকিল সাহেব বললেন, ‘তাইতো, আমার রোলেক্স ঘড়িটি কোথায় গেল?’

পাঠক, আপনি হয়তো বলবেন, এটা একটা সিলি জোক। আমি জানি, তবু বলব, „Anger is only one letter short of danger „. আপনার এক মিনিটের রাগ আপনার জীবন থেকে মুছে দেবে ষাট সেকেন্ডের সুখ।

আইনস্টাইন বলেছেন, „Anger dwells only in the bosom of fools“ I রাগ শুধু থাকে বোকাদেরই মনে।
পাঠক, রাগ বা ঘৃণা মন থেকে ঝটপট তাড়িয়ে দিন। যে মুহূর্তে মনে রাগ আসবে, চিন্তা করুন এর ফলাফলের কথা। সেই মুহূর্তে যদি আপনি এক মিনিটের জন্য ধৈর্য ধরতে পারেন, দেখবেন এক শ দিনের দুঃখ থেকে আপনি বেঁচে যাবেন।

একজন বিখ্যাত ব্যক্তি বলেছেন :
„The best answer to anger is silence „ I রাগের একমাত্র উত্তর নীরবতা।
যে জিনিসটি আপনি রাগ দিয়ে শুরু করবেন, শেষ হবে লজ্জা দিয়ে। রাগ আসে হতাশা থেকে। যেটা আপনি আশা করেছিলেন জীবন থেকে, সেটা না পেলে আপনার রাগ আসে, তাই না? সেটা ব্যক্তি হোক বা বস্তু হোক।
রাগকে আপনার নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, রাগ যেন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে।
পাঠক, রাগ আপনার হবেই। জীবনটা এ রকমই, যে কোনো অবস্থায় যে কোনো মুহূর্তে আপনি রেগে যেতে পারেন। দীর্ঘ একটি নিঃশ্বাস নিন। রাগকে খেলতে দিন।


রাগে আপনার অজান্তেই যেসব ক্ষতি করে ঃ 


-. বিশেষজ্ঞরা বলেন, টানা দুই ঘণ্টা যদি কেউ রাগী অবস্থায় থাকে, তাহলে তাঁর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণে।

-. আপনার হুট করে রাগ উঠে যায় এবং তা অনেকক্ষণ ধরে স্থায়ী, তবে এটি মস্তিষ্কের ওপর চাপ ফেলে। এতে মস্তিষ্কের রক্তনালিগুলো বন্ধ হয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।  

-.  সবসময় রাগে থাকলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। 

-. অতিরিক্ত রাগ বা মেজাজ মানুষের মধ্যে বিষণ্ণতা তৈরি করে। কোনো বিষয়ে রেগে গেলে এবং বিষয়টি সমাধান করতে না পারলে আমাদের মধ্যে বিষণ্ণতা তৈরি হয়।

-. রাগ মানুষের আয়ু কমিয়ে দেয়। গবেষণায় বলা হয়, সুখী মানুষ দীর্ঘদিন বাঁচে। 

আমি আপনাদের কয়েকটি মেথড এর কথা বলব যাতে আপনি আপনার রাগ কমাতে পারেনঃ

১. যেই মুহূর্তে আপনি কারও ব্যবহারে রেগে যাচ্ছেন, নিজের মনকে অন্য অবস্থায় নিয়ে আসুন। নিজেকে বলুন, আমার জীবনে আমি সুখী, কেন আমি এত ছোট্ট ব্যাপারে আমার সুখ নষ্ট করব? তাকে ক্ষমা করে দিন।
ক্ষমা করলেন সে জন্য নয় যে সেই মানুষ এটির উপযুক্ত, বরং আপনার নিজের জন্য।

২. টেলিফোনে আপনি যদি রেগে যান, ক্ষতি হবে আপনারই। আপনি রাগের মাথায় যা বলবেন, পরে সে জন্য অনুশোচনা করবেন। অন্য পক্ষকে বলবেন, ‘আচ্ছা, আমি রাখি, পরে এ ব্যাপারে আলোচনা করব, কেমন?’

৩. খুব যদি রেগে যান, হাঁটুন, সাইকেল চালান, আপনার বাথরুমটি পরিষ্কার করুন, বুকডন দিন। দেখবেন রাগ অনেক কমে গেছে ।

৪. খুব দীর্ঘ একটি প্রশ্বাস নিন। দেখবেন আপনার পেট ফুলে উঠেছে। এবার মনে মনে গুনুন এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ। এবার আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস ছাড়ুন । কয়েকবার রিপিট করুন। দেখবেন রাগ কমে গেছে।

৫. খাতা আর কলম নিন। ঐ লোকের বিরুদ্ধে (যে আপনাকে রাগিয়ে তুলেছে) যা কিছু মনে আসে লিখে ফেলুন, গালাগালসহ। দেখবেন মনটি শান্ত হয়ে গেছে।

৬. যে মুহূর্তে রেগে যাবেন, সেই মুহূর্তে হাসার চেষ্টা করুন। আমি জানি, এটা খুবই কঠিন। চেষ্টা করুন আপনার প্রিয় গানটি গাইতে।

৭. একবার চিন্তা করে দেখুন, সত্যিই দরকার আছে কি না এ ব্যাপারে রেগে যাওয়ার।
এই সাতটি বিষয় অনুসরণ করবেন, দেখবেন আপনার রাগ অনেক কমে গেছে।

-
-

---ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত --- 

Post a Comment

If you learn something from our post please comment...

 
Top