0
জেনে নিন ভূমিকম্প নিয়ে ইতিবৃত্ত (মেগা পোস্ট)

সারা বিশ্বেই বড়ো বড়ো ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্প হয় বাংলাদেশেও। সম্প্রতি এধরনের ভূমিকম্পের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ভূমিকম্প হলে তার পরপরই এনিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা কতোটুকু জানি। এখানে ভুমিকম্প কি? কেন ভুমিকম্প হয়? ভুমিকম্প কত প্রকারের হয়? ইতিহাসের স্মরণীয় ভুমিকম গুলো কোথায় এবং তাতে কি ক্ষয়ক্ষতি হয়! এছাড়া আরো কিছু বিস্ময়কর তথ্য তুলে ধরা হলো:


ভুমিকম্প কি ? 

ভূমিকম্প বলতে পৃথিবীপৃষ্ঠের অংশবিশেষের হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন বা আন্দোলনকে বোঝায়। হঠাৎ বুঝতে পারলেন আপনার ঘরের কোনো জিনিস নড়ছে, দেয়ালের ঘড়ি, টাঙানো ছবিগুলো নড়ছে, আপনিও ঝাঁকুনি অনুভব করছেন, তখন বুঝতে হবে ভূমিকম্প হচ্ছে। ভূমিকম্প বা ভূকম্পনঃ ভূ মানে পৃথিবী আর কম্পন হলো কাঁপা; সোজাভাবে ভূমিকম্প হলো পৃথিবীর কেঁপে ওঠা। তার মানে পৃথিবী যখন কাঁপে তখন আমরা তাকে ভূমিকম্প বলি।

ভুমিকম্প কেন হয়!!  

কোনো কারণে ভূ-পৃষ্ঠ কম্পন হলে তাকেই ভূমিকম্প বলে ! আমরা সবাই জানি আমাদের পৃথিবীর পৃষ্ঠগুলো একেকটা দ্বীপের মত ভেসে বেড়ায় | এর নিচে থাকে টেক্টোনিক প্লেট ,এখন কোনো কারণে এই প্লেটগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হলেই এই ভূ-কম্পনের সৃষ্ট হয় | ভূমিকম্পের সময় সাধারণত ৩ ধরনের ওয়েভ সৃষ্টি হয় এর মধ্যে প্রথম দুটো মাটির নিচে সৃষ্টি হয় যার একটি প্রাইমারি ওয়েভ এবং অপরটি সেকেন্ডারী ওয়েভ আর শেষ ওয়েভটা পৃষ্ঠার উপর হয়ে থাকে | ভূমিকম্পের সময় প্রথমে আসে প্রাইমারি ওয়েভ যার দ্বারা মৃদ কম্পন হতে পারে এরপরে সেকেন্ডারী ওয়েভ এসে সবকিছু ধ্বংস করে চলে যায় !!

ভুমিকম্প কত ধরনের বা প্রকারের হয়ে থাকে?

পৃথিবীতে বছরে গড়ে কত ভূমিকম্প হয়, শুনলে কপালে উঠতে পারে চোখ। বছরে গড়ে ছয় হাজার ভূমিকম্প হয়। তবে এগুলোর অধিকাংশই মৃদু যেগুলো আমরা টের পাই না। সাধারণত তিন ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে- প্রচণ্ড, মাঝারি ও মৃদু। আবার উৎসের গভীরতা অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- অগভীর, মধ্যবর্তী ও গভীর ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠের ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে অগভীর, ৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে মধ্যবর্তী এবং ৩০০ কিলোমিটারের নিচে হলে গভীর ভূমিকম্প বলে। ভূমিকম্পের কারণ এটা নয় বটে, তবে পৃথিবীর গভীরে ঠিকই একটা পরিবর্তন হয়। সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে… ১. ভূপৃষ্ঠজনিত ২. আগ্নেয়গিরিজনিত ৩. শিলাচ্যুতিজনিত

ভুমিকম্প যেভাবে মাপা হয়ঃ 

পরিমাপ সিসমোগ্রাফ আবিষ্কারের আগে মানুষ শুধু বলতে পারত ভূমিকম্প হয়ে গেছে। কিন্তু কোন মাত্রায় হলো, বলা সম্ভব ছিল না। আধুনিক সিসমোগ্রাফের বয়স প্রায় ১৫০ বছর। ভূমিকম্প মাপা হয় দুইভাবে- তীব্রতা এবং প্রচণ্ডতা বা ব্যাপকতা। ভূমিকম্পের মাত্রা মাপা হয় রিখটার স্কেলে। ভূমিকম্প মাপার জন্য অনেকগুলো স্কেল রয়েছে তবে,আমাদের সবার কাছে পরিচিত হলো রিখটার স্কেল | রিখটার স্কেল মাপার পদ্ধতির জন্য ১০ বেসড লগারিদম ব্যবহার করা হয় | আর এটা মাপা হয় মাইক্রোমিটারে | এই যেমন - কোনো ভূমিকম্পে মাটির কম্পন যদি হয় ১ মিটার তাহলে প্রথমে তাকে মাইক্রোমিটারে কনভার্ট করব এরপরে তার লগারিদম বের করব | সে হিসেবে দাড়ায় log ১০^৬ = ৬ রিখটার স্কেল ! (১ মাইক্রোমিটার = ১/১০^৬) এভাবে আমরা যেকোনো হিসেব রিখটার স্কেলে বের করতে পারি শুধু তা আগে মাইক্রোমিটারে কনভার্ট করতে হবে !
স্কেলে এককের সীমা ১ থেকে ১০ পর্যন্ত। রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫-এর বেশি হওয়া মানে ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা। মনে রাখতে হবে, ভূমিকম্প এক ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলেই এর মাত্রা ১০ থেকে ৩২ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ - ৫.৯৯ মাঝারি ৬ - ৬.৯৯ তীব্র ৭ - ৭.৯৯ ভয়াবহ ৮ - এর ওপর অত্যন্ত ভয়াবহ।


ভুমিকম্পের রহস্য আবিস্কার ও উদ্ঘাটনঃ 

= > ব্রিটিশ একজন বিজ্ঞানী ভূমিকম্পের কারণ চিহ্নিত করেছেন।
ব্রিটেনের একজন প্রকৌশলী জন মাইকেল ভূমিকম্পের কারণ উদঘাটন করেছেন। এই আবিষ্কার হয়েছে ১৮শো শতাব্দীর শুরুর দিকে। তাকে দেখা হয় ভূকম্পনবিদ্যার একজন জনক হিসেবে। তিনি বলেন, ভূ-পৃষ্ঠের বহু নিচে শিলা-খণ্ডের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে ভূমিকম্প হয়ে থাকে।


=>   আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার পার্কফিল্ডকে বলা হয় `পৃথিবীর ভূমিকম্পের রাজধানী`। এখানে একটি ব্রিজ আছে, যেটি দুটি টেকটনিক প্লেটের ওপর অবস্থিত ভূমিকম্প নিরূপক যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছিল দুই হাজার বছর আগে। তৈরি করেছিলেন চিনের বিজ্ঞানী ঝ্যাং হ্যাং।


 ইতিহাসের  স্মরণীয়  ভুমিকম্প

= >  ভূমিকম্পের কারণে চিলির একটি শহর ১০ ফুট পশ্চিমে সরে যায়।
২০১০ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি বড়ো ধরনের এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিলো চিলির কনসেপসিওন শহরে। রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিলো ৮.৮। এর ফলে পৃথিবীর শক্ত উপরিভাগে ফাটল ধরে এবং শহরটি ১০ ফুট পশ্চিমে সরে যায়।


=> দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল চীনে। ১৫৫৬ সালে। ৮ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল এই ভূমিকম্পে।


= >  মেক্সিকোতে ১৯৮৫ সালে একবার ভূমিকম্প হয়েছিলো ১৯৮৫ সালে যেবার এই মেক্সিকো থেকে ২০০০ কিলোমিটার দূরে অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলের পানি ছিটকে পড়তে পড়তে শেষ হয়ে গিয়েছিলো।


=>  ১৯৮৫ সালে মেক্সিকো সিটিতে ৮ মাত্রার ভয়ানক ভূমিকম্প হয়। সেই ভূমিকম্পে মেক্সিকোর এক হাসপাতাল ভেঙে পড়ে। এক সপ্তাহ সেই হাসপাতালের ভিতর কেউ ঢুকতে পারেননি। দিন আটেক পর উদ্ধারকারী দল গিয়ে বেশ কয়েকজন সদ্যোজাতকে উদ্ধার করে। এক সপ্তাহ ধরে সেইসব সদ্যোজাত শিশুদের কোনো পানি বা খাবার, বা কোনো মানুষের সান্নিধ্য পায়নি। এরপরেও কীভাবে শিশুরা বেঁচে ছিল সেটাই আশ্চর্যের।


=> প্রতিবছর ভূমিকম্পে প্রায় আট হাজার মানুষ মারা যায়। গত চার হাজার বছরে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ মারা গেছে ভূমিকম্পে।


=>  ১৮৮১ সালে ১৬ ডিসেম্বর এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিসিসিপি নদীর একটা অংশ পিছন দিকে বইতে শুরু করে।


=>   বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লক্ষ ভূমিকম্প রিখটার স্কেলে ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে মাত্র এক লক্ষ আমরা অনুভব করতে পারি। তাদের মধ্যে ১০০টা ভূমিকম্প ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ি থাকে।


= >  ভূমিকম্পে খাটো হয়ে যায় এভারেস্ট।
নেপালে ২০১৫ সালের ২৫শে এপ্রিল আঘাত হানে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কমে আসে হিমালয়ের অনেক পর্বতের উচ্চতাও। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা কমে গিয়েছিলো এক ইঞ্চির মতো।


=> বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল চিলিতে ১৯৬০ সালে। রিখটার স্কেলে চিলির সেই ভূমিকম্পের মাত্র ছিল ৯.৫।


ভুমিকম্পে পশুপাখি আগাম সংকেত পায়! 

= > ভূমিকম্পের আগে প্রাণীর আচরণে পরিবর্তন ঘটে।
      ভূমিকম্পের ফলে যে শুধু ব্যাঙের আচরণেই পরিবর্তন ঘটে তা নয়, ইন্দোনেশিয়া এবং ২০০৪ সালে সুনামির আগে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন যে তারা অনেক পশু পাখিকে দেখেছেন উঁচু এলাকার দিকে ছুটে যেতে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট কম্পন পশুপাখিরা টের পেয়ে যায়।


= >  ভূমিকম্পের আগে স্থির পানি থেকে গন্ধ বের হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্পের আগে পুকুর, খাল-বিল, হ্রদ, জলাশয়ের স্থির পানি থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে। এমনকি সেই পানি সামান্য উষ্ণও হয়ে পড়তে পারে। প্লেট সরে যাওয়ার কারণে মাটির নিচ থেকে যে গ্যাস নির্গত হয় তার কারণে এটা হয়ে থাকে। এর ফলে ওই এলাকার বন্যপ্রাণীর আচরণেও পরিবর্তন ঘটতে পারে।


= > ওপেন ইউনিভার্সিটির প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগ বলছে, ২০০৯ সালে ইটালিতে এক ভূমিকম্পের সময় এক ধরনের ব্যাঙ সেখান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলো এবং ফিরে এসেছিলো ভূমিকম্পের পরে। বলা হয়, এই ব্যাঙ পানির রাসায়নিক পরিবর্তন খুব দ্রুত শনাক্ত করতে পারে।


=>   কিছু কিছু প্রাণী নাকি ভূমিকম্প আগেই টের পায়। তবে সম্প্রতি গবেষণায় জানা যায়, মানুষও আগে থেকে ভূমিকম্প টের পেতে পারে। এর টের পাওয়ার কারণ হচ্ছে মাটির তলার
কিছু গ্যাস পুকুর বা জলাশয়ের পানির মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। মানুষ সে অস্বাভাবিক গন্ধ থেকেই ভূমিকম্পের বিষয়টি টের পায়।

ভুমিকম্প নিয়ে প্রাচীন ধারনাঃ 

= > জাপানি পৌরাণিক কাহিনীতে ভূমিকম্প হয়েছিলো বড়ো আকারের এক ক্যাটফিশের কারণে।

ইতিহাসে দেখা যায় জাপানি এক দ্বীপে মাটির নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিলো নামাজু নামের বিশাল এক ক্যাটফিশ। পৌরাণিক কল্প কাহিনীতে বলা হয়, অনেক ভূমিকম্প হয়েছিলো এই মাছটির কারণে।


= > প্রাচীন গ্রিকরা বিশ্বাস করতেন সমুদ্রের দেবতা পজিডন রেগে গিয়ে পৃথিবীর ওপর আঘাত করলে ভূমিকম্প হতো।


= > হিন্দু পুরাণে আছে এই পৃথিবীকে ধরে রেখেছে আটটি হাতি। এই হাতিগুলো দাঁড়িয়ে আছে একটি কচ্ছপের পিঠের ওপর। আর ওই কচ্ছপটি ছিলো কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকা একটি সাপের উপরে। এই প্রাণীগুলোর যে কোনো একটি যখন নড়ে উঠতো তখনই ভূমিকম্প হতো।


=>   প্রাচীন গ্রিকদের বিশ্বাস ছিল, দেবরাজ জিউসের সঙ্গে এক যুদ্ধে হেরে যান অপর দেবতা অ্যাটলাস। জিউস তাঁকে সাজা হিসেবে পৃথিবী কাঁধে তুলে নিতে নির্দেশ দেন। সেই থেকে অ্যাটলাসের কাঁধে রয়েছে পৃথিবী। এক কাঁধে পৃথিবী ভার বহন করতে করতে অ্যাটলাস যখন হাঁপিয়ে ওঠেন, তখন পৃথিবীকে আরেক কাঁধে স্থানান্তর করেন। আর তখন ভূকম্পন হয়।


=>   চীনাদের মধ্যে এ ধারণা চালু রয়েছে যে তাদের শক্তিধর ড্রাগন মাটির অনেক গভীরে বাস করে। ড্রাগন কখনো কোনো কারণে বিরক্ত হলে নড়েচড়ে ওঠে। আর তখনই পৃথিবী কেঁপে ওঠে ভূমিকম্প ঘটায়। জাপানি পুরাণে আছে, বিশাল এক মাগুর মাছের পিঠে অবস্থান করছে পৃথিবী। মাছটি কখনো নড়ে উঠলে ভূমিকম্প ঘটে।


এছাড়াও ভুমিকম্প নিয়ে আরো কিছু অবাক করা তথ্য !! 

=>  প্রতি ৩০ সেকেন্ডে দুনিয়ার কোথাও না কোথাও ভূমিকম্প হচ্ছে। এটা আলাদা কথা কী মানুষ সেগুলোর সব টের পাচ্ছে না।


=>  দুই মাত্রার কম ভূমিকম্প আমরা টের পাই না। রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার থেকে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পে মাটি কেঁপে ওঠে।


= >  সারা পৃথিবীতে বছরে লাখ লাখ ভূমিকম্প হয়।প্রত্যেক বছর গড়ে ১৭টি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় রিখটার স্কেলে যার মাত্রা সাতের উপরে এবং আট মাত্রার ভূমিকম্প হয় একবার।


=> যেমন `আর্থ কোয়েক হয় তেমন `মুন কোয়েক`ও হয়। মানে ভূমিকম্পের মত চন্দ্রকম্পও হয়। চাঁদেও পৃথিবীর মতও ভূমিকম্প হয়।


=> পৃথিবীর থেকে কম মাত্রার ভূ কম্প হয়ে চাঁদে। পৃথিবীর মতো অত ঘনঘন কেঁপে ওঠে না চাঁদ।


= > ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরে লাখ লাখ ভূমিকম্প হয়। এর অনেকগুলো হয়তো বোঝাই যায় না। বোঝা যায় না কারণ খুব প্রত্যন্ত এলাকায় এসব হয় অথবা সেগুলোর মাত্রা থাকে খুবই কম।


=> ভূমিকম্পের ফলে আগ্নেয়গিরি জেগে উঠে অগ্ন্যুত্‍পাত হতে পারে।

=> দক্ষিণ গোলার্ধের চেয়ে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে ভূমিকম্প বেশি হয়।

=>   প্রতি বছর জাপানে দেড় হাজার বার ভূমিকম্প হয়

=> সাত বা তার থেকে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পে গোটা একটা শহর ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

= >  ভূমিকম্পের কারণে দিনের দৈর্ঘ্য কমবেশি হতে পারে।
জাপানের উত্তর-পূবে ২০০৯ সালের ১১ই মার্চ একটি বড়ো ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিলো ৮ দশমিক ৯। এর ফলে পরিবর্তন ঘটে পৃথিবীর ভরের বণ্টনে এবং তার প্রভাবে পৃথিবী ঘুরতে থাকে সামান্য দ্রুত গতিতে আর তখন দিনের দৈর্ঘ্য কমে যায়। সেদিন দিন ১.৮ মাইক্রো সেকেন্ড ছোট ছিলো।


=>  যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রায়ই ছোটখাটো ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে আলাস্কায় হয় সবচেয়ে বেশি। সেখানে রিখটার স্কেলে ৭ তীব্রতার ভূমিকম্প হয় প্রায় বছরজুড়ে। আর গড়ে ১৪ বছর পর পর ৮ তীব্রতার একটা ভূমিকম্প থাকেই। এমন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে দিব্যি দিন কাটাচ্ছে আলাস্কার মানুষ। সেখানে এ যাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে ১৯৬৪ সালের মার্চে। আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে আঘাত হানে ওই ভূমিকম্প। এতে শতাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটে।


= > সান ফ্রান্সিসকো সরে যাচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহর প্রত্যেক বছর গড়ে দুই ইঞ্চি করে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে সরে যাচ্ছে। এই একই গতিতে বাড়ে আমাদের আঙ্গুলের নখ। শহরের এই অবস্থান পরিবর্তনের কারণ হচ্ছে সান অ্যানড্রেয়াস ফল্টের দুটো দিক ক্রমশ একটি অপরটিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই গতিতে চলতে থাকলে এই দুটো শহর কয়েক লাখ বছর পর একত্রিত হয়ে পড়বে।


=> যুক্তরাষ্ট্রে ১৮১১ সালে বিস্ময়কর এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের নিউ মাদ্রিদে। এর তীব্রতা ছিল ৮.১। ভূমিকম্পের পর আফটারশক বা পরাঘাত ছিল গোটা বছরজুড়ে।


=>  বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে যে বিদ্যুৎ নিঃসরিত হয়েছিল, তা দিয়ে গোটা যুক্তরাষ্ট্রের সব বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তিন দিনের যাবতীয় বৈদ্যুতিক কাজ করা সম্ভব।


= > ভূমিকম্পের পরেও পানিতে ঢেউ উঠতে পারে।
ভূমিকম্পের পরেও পুকুরে কিম্বা সুইমিং পুলের পানিতে আপনি কখনো কখনো ঢেউ দেখতে পারেন। একে বলা হায় শ্যাস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্প হয়তো শেষ হয়ে গেছে কিন্তু তারপরেও কয়েক ঘণ্টা ধরে অভ্যন্তরীণ এই পানিতে তরঙ্গ অব্যাহত থাকতে পারে।


= > ভূমিকম্পের কথা মনে রেখেই ইনকা সভ্যতা ও জাপানি বাড়িঘর তৈরি।
ভূমিকম্পের কারণে যাতে বাড়িঘর ধসে না যায় সে বিষয়টি মাথায় রেখেই ইনকা আমলের স্থাপত্য ভবন ও জাপানি প্যাগোডা নির্মিত হয়েছিলো। ৫০০ বছর আগে ইনকার স্থাপত্য কর্মীরা যখন মাচু পিচু শহর নির্মাণ করে তারা বাড়িঘর নির্মাণের ব্যাপারে একটি আদিকালের জ্ঞান কাজে লাগিয়েছিলো যাতে ঘন ঘন হওয়া ভূমিকম্পের হাত থেকে তাদের বাড়িঘর বেঁচে যেতে পারে।



= > বেশিরভাগ ভূমিকম্পেরই উৎস প্রশান্ত মহাসাগর।
পৃথিবীতে যতো ভূমিকম্প হয় তার অধিকাংশ, ৯০ শতাংশই হয় রিং অফ ফায়ার এলাকাজুড়ে। এই এলাকাটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে।

- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ও সংকলিত -

Post a Comment

If you learn something from our post please comment...

 
Top