বিবাহের কতিপয় সুন্নত সমূহ যা জানা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরী।
(১) মাসনূন বিবাহ সাদা সিধেও অনাড়ম্বর হবে, যা অপচয়, অপব্যয়,বেপর্দা ও বিজাতীয় সংস্কৃতিমুক্তহবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থের অধিক মহরানার শর্ত থাকবেনা।(তাবারানী আউসাত, হাদিস নং-৩৬১২)
(২) সৎ ও আল্লাহভীরু পাত্র-পাত্রীরসন্ধান করে বিবাহের পূর্বে পয়গাম পাঠানো।কোন বাহানা বা সুযোগে পাত্রী দেখা সম্ভব হলে, দেখে নেয়া মুস্তাহাব।কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘটা করে পাত্রী দেখানোর যে প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিততা সুন্নতের পরিপন্থী ওপরিত্যাজ্য।(বুখারী হাদিস নং-৫০৯০, ইমদাদুলফাতাওয়া-৪: ২০০)
(৩) শাউয়াল মাসে এবং জুমুয়ার দিনে মসজিদে বিবাহসম্পাদন করা।উল্লেখ্য, সকল মাসের যে কোনদিন বিবাহ করা যায়িজ আছে।(মুসলিম ১৪২৩/ বায়হাকী ১৪৬৯৯)
(৪) বিবাহের খবর ব্যাপক ভাবে প্রচার করে বিবাহ করা এবং বিবাহের পরে আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকদের মাঝে খেজুর বন্টন করা।(বুখারী/৫১৪৭)
(৫) সামর্থানুযায়ী মোহর ধার্যকরা। (আবু দাউদ/২১০৬)
(৬) বাসর রাতে স্ত্রীর কপালের উপরের চুল হাতে নিয়ে এই দোয়া পড়াঃ-“আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা খয়রাহা ওয়া খয়রা মাজাবালতুহা আলাইহি ওয়াওযুবিকামিন শার্রিহা মিন শার্রি মা জাবালতাহা আলাইহি”(আবু দাউদ/২১৬০)
(৭) স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি করবে, সহবাস এর প্রথমে নিম্নোক্ত দু’আপড়ে নিবেঃ-“বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মারাযাকতানা।” (মুসলিম/১৪৩৪)উপরোক্ত দোয়া না পড়লে শয়তানের তাছীরে বাচ্চার উপর কু-প্রভাব পড়ে।অতঃপর সন্তান বড় হলে, তার মধ্যে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পেতে থাকে এবং বাচ্চা নাফরমান ও অবাধ্য হয়।সুতরাং পিতা মাতাকে খুবই সতর্ক থাকা জরুরী।
(৮) বাসর রাতের পর স্বীয় আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাংখী এবংগরীব মিসকীনদের তাউফীকঅনুযায়ী ওলীমা খাওয়ানোরআয়োজন করা।(মুসলিম/১৪২৭)
(৯) কোন পক্ষ যেওরের শর্ত করানিষেধ এবং ছেলের পক্ষ থেকেযৌতুক চাওয়া হারাম।(আহসানুল ফাতাওয়া ৫/১৩)
(১০) কনের ইযন এর জন্য স্বাক্ষীর কোন প্রয়োজন নাই।সুতরাং ছেলের পক্ষের লোক ইযন শুনতে যাওয়া অনর্থক এবং বেপর্দা।সুতরাং তা নিষেধ।মেয়ের কোন মাহরুম বিবাহের এবংউকীল হওয়ার অনুমতি নিবে।(মুসলিম/১৪২১)
(১১) শর্ত আরোপ করে বর যাত্রীরনামে বরের সাথে অধিক সংখ্যাকলোকজন নিয়ে যাওয়া এবং কনেরবাড়ীতে মেহমান হয়ে কনেরপিতার উপর বোঝা সৃষ্টি করা।আজকের সমাজের একটিজঘন্য কু-প্রথা, যা সম্পূর্ন রুপেপরিত্যাগ করা আবশ্যক।(মুসনাদেআহমাদ/২০৭২২,বুখারী/২৬৯৭)
(১২) ওলীমায় অতিরিক্ত ব্যয় করাকিংবা খুব উচু মানের খানারব্যবস্থাকরা জরুরী নয়।বরং সামর্থানুযায়ী খরচ করাই সুন্নতআদায়ের জন্য যথেষ্ট।যে ওলীমায় শুধু ধনী ও দুনিয়াদারলোকদের দাওয়াত দেওয়া হয়,দ্বীনদার ও গরীব গরীব-মিসকিনদেরদাওয়াত দেওয়া হয়না, সেওলীমাকেহাদিসে নিকৃষ্টতম ওলীমা বলেআখ্যায়িত করা হয়েছে।সুতরাং এ ধরনের ওলীমাআয়োজন থেকে বিরত থাকা উচিত(আবু দাউদ /৩৭৫৪)আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্নতমোতাবেক বিবাহ করারতৌফিক দান করুন।
Post a Comment
If you learn something from our post please comment...