0
পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হওয়া ছেলে-মেয়েদের জন্য কিছু উপদেশ, পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত থেকে মুক্তি, কিভাবে তওবা করবেন, পর্ণোগ্রাফিতে থেকে মুক্তি




































পর্নগ্রাফিতে আসক্ত ভাই ও বোনদের জন্য ২০টি উপদেশ !!এবং তওবা করে আল্লাহ দিকে ফিরে আসার উপায়!!!পর্ণোগ্রাফিত­ে আসক্ত ব্যক্তির জন্য ২০ উপদেশঃ (পড়া শেষে শেয়ার করুন) পর্ণোগ্রাফি বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া একটি মারাত্মক ব্যাধি । যা এতটাই ভয়ানক যে, একটা ছেলে কিংবা মেয়ের নৈতিক অবনতি থেকে শুরু করে পারবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির বড় কারণের মধ্যে একটি । তাই এই নোংরা কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা একজনন মানুষ হিসেবে অত্যাবশ্যক ।

আর এরই প্রেক্ষিতে পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হওয়া ছেলে-মেয়েদের জন্য কিছু উপদেশঃ

 ১. নিজেকে মানুষ হিসেবে কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়, তা নিয়ে ভাবুন ।


২. নিজেকে একজন প্রকৃত মানুষ অর্থাৎ মুসলিম হিসেবে চিন্তা করুন ।


৩. একজন মুসলিম হিসেবে আল্লাহ সুবাহানওয়া তা’আলা কে সর্বোচ্চ ভয় করুন ।


৪. আল্লাহর ভয়কে নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে রাসূল (সা) এর সুন্নাহ অনুসরণ করুন ।


৫. ভালো-মন্দ হিসেব করতে ইসলামকে সামনে আনুন ।


৬.দ্বীনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আনুগত্য দেখে বন্ধু নির্বাচন করুন।


৭. অবসর সময়ে একাকী না থেকে (দ্বীনি) বন্ধুদের সাথে থাকুন ।


৮. পবিত্রতার সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামা’তে আদায় করুন এবং ঘরে নফল সালাত আদায়ের অভ্যাস গড়ুন ।


৯. পরিবারের মানুষের সাথে লজ্জাশীলতা বজায় রাখুন ।১০. যেকোন মেয়ে থেকে নিজের চোখকে হেফাজত করুন ।


১১. বিয়ের ইচ্ছে জাগলে (সামর্থ্যবান হলে) বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের বলুন এবং আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করুন ।


১২. বিয়ের পর নিজ স্ত্রীর উপর সন্তুষ্ট থাকুন । স্ত্রী সুন্দর না হলে আখিরাতে এর উত্তম প্রতিদান পাওয়ার আশা করুন ।


১৩.বাসায় টিভি, ভিসিআর থাকলে সবাই যাতায়াত করে এবং বসে এমন রূমে রাখুন ।


১৪. মন খারাপ লাগলে বিভিন্ন কারীদের কুরআন তিলাওয়াত শুনুন ।


১৫. বিভিন্ন স্কলারদের ইসলামিক চিন্তাভাবনা পড়ুন ।


১৬. বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নির্যাতি মুসলিমদের নিয়ে চিন্তা করুন । তাদের সাহায্য করতে পরিকল্পনা করুন ।


১৭. বিভিন্ন ইসলামিক কাজে নিজেকে জড়িত করুন এবং আগ্রহের সাথে কাজ করুন ।


১৮. কোন খারাপ চিন্তা মাথায় আসলে, সাথে সাথে আল্লাহর নিকট তাওবা করুন ।


১৯. নিজেকে একজন যৌনকর্মী থেকে পৃথকভাবে ভাবতে শিখুন এবং এসব আচরণকে মন থেকে ঘৃণা করুন ।


২০. ‘আপনার প্রতিটা (ভালো/মন্দ) কর্ম আল্লাহ দেখছেন এবং দু’জন ফেরেস্তা তা লিখে রাখছেন’ – বিষয়টি মাথায় রাখুন এবং জাহান্নামের শাস্তিকে ভয় করুন ।সৎকর্ম ও আল্লাহ্‌ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর।

পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (সুরা আল মায়েদা ২)তাওবাহ করলে আল্লাহ খুশী হন আল-কুরআনে এসেছে,﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمۡ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمۡ سَيِّ‍َٔاتِكُمۡ وَيُدۡخِلَكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ﴾ [التحريم: ٨]


হে ঈমানদারগণ,
.................. তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাটি তাওবা; আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। [সূরা আত-তাহরীম : ৮]রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,« يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوبُوا إِلَى اللَّهِ فَإِنِّى أَتُوبُ فِى الْيَوْمِ إِلَيْهِ مِائَةَ مَرَّةٍ ».হে মানবসকল! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, আর আমি দিনে তাঁর নিকট একশত বারের বেশি তাওবাহ করে থাকি।[সহীহ মুসলিম :৭০৩৪]বান্দার তাওবাহরআনাস (রাঃ) হতে বর্নিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা বান্দার তাওবাহর কারনে সেই লোকটির চেয়েও অধিক খুশি হন, যে লোকটি মরুভুমিতে তার উট হারিয়ে পরে তা পেয়ে যায় ।(বুখারিঃ৬৩০৯ ইঃফাঃ৫৭৫৭/ মুসলিমঃ ৪৯/­১ হাঃ২৭৪৭)

তাওবা কিভাবে করতে হবে ...

তওবা করার জন্য জন্য কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে, তাহলেই আল্লাহ তাআ’লা সেই তওবা কবুল করবেন।
১. পাপ কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এখন শুধু মুখে মুখে তওবা করি, কয়েকদিন পর থেকে পাপ কাজটা ছেড়ে দেবো – এ রকম হলে তোওবা হবে না।
২. অতীতের সমস্ত পাপ কাজ ও ভুল ত্রুটি আল্লাহর কাছে স্বীকার করে তাঁর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে।

৩. অন্তরে ঐকাজগুলোর প্রতি ঘৃণা রেখে সেইগুলোতে আর ফিরে না যাওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করতে হবে।

৪. লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে সমস্ত গুনাহ খাতার জন্য “ইস্তিগফার” করতে হবে (মাফ চাইতে হবে) + “তওবা” করতে হবে (গুনাহ করা বন্ধ করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে হবে)।

৫. কারো হক্ক নষ্ট করে থাকলে তাকে তার হক্ক ফিরিয়ে দিতে হবে, অথবা যেইভাবেই হোক, সামর্থ্য না থাকলে অনুরোধ করে, ক্ষমা চেয়ে তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে। উল্লেখ্য, তোওবা করলে আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন, এমনকি কারো পাপ আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেলেও আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন। কিন্তু বান্দার কোনো হক্ক নষ্ট করলে সেটা বান্দা মাফ না করলে তিনি মাফ করবেন না।

৬. অন্তরে আশা রাখতে হবে, যে আমি গুনাহগার কিন্তু আল্লাহ গাফুরুর রাহীম – অতীব ক্ষমাশীল ও দয়ালু। সুতরাং তিনি আমার তওবা কবুল করবেন।৭. তোওবা করার পরে প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে পাপ কাজ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে, এবং সাধ্য অনুযায়ী বেশি বেশি করে নেকীর কাজ করার চেষ্টা করতে হবে।

৮. যে পাপ কাজ থেকে তোওবা করা হলো (সমস্ত পাপ কাজ থেকেই তওবা করা ফরয), কোনো ভুলে বা কুপ্রবৃত্তির কারণে পাপ কাজটা করে ফেললে সাথে সাথে আবার তোওবা করে সেটা থেকে ফিরে হবে। এইভাবে যখনই কোনো পাপ হবে সাথে সাথেই তওবা করতে হবে মৃত্যু পর্যন্ত।
দোআ: ১২৯ ক্ষমা প্রার্থনা ও তাওবা করারাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ্‌র শপথ, নিশ্চয় আমি দৈনিক সত্তর -এর অধিকবার আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি।

[১]রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, হে মানুষ, তোমরা আল্লাহ্‌র কাছে তাওবা কর, নিশ্চয় আমি আল্লাহ্‌র কাছে দৈনিক একশত বার তাওবা করি। [২]রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন যে ব্যক্তি বলবে,أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الْعَظيمَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ القَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيهِআমি মহামহিম আল্লাহ্‌র নিকট ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি চিরস্থায়ী, সর্বসত্তার ধারক। আর আমি তাঁরই নিকট তওবা করছি।’আস্তাগফিরুল্লা-হাল­ ‘আযীমল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কায়্যূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি[১] বুখারী, ফাতহুল বারীসহ, ১১/১০১, নং ৬৩০৭। [২] মুসলিম, ৪/২০৭৬, নং ২৭০২।
[৩] আবূ দাউদ ২/৮৫, নং ১৫১৭; তিরমিযী ৫/৫৬৯, নং ৩৫৭৭; আল-হাকিম এবং সহীহ বলেছেন, তার সাথে ইমাম যাহাবী ঐকমত্য পোষণ করেছেন, ১/৫১১, আর শাইখুল আলবানীও সহীহ বলেছেন। দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৮২, জামেউল উসূল লি আহাদীসির রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪/৩৮৯-৩৯০, আরনাঊত এর সম্পাদনাসহ।
[৪] তিরমিযী নং ৩৫৭৯, নাসায়ী, ১/২৭৯ নং ৫৭২; হাকেম ১/৩০৯। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৮৩; জামে‘উল উসূল, আরনাউতের তাহকীকসহ ৪/১৪৪।
[৫] মুসলিম, ১/৩৫০; নং ৪৮২।
[৬] মুসলিম, ৪/­২০৭৫, নং ২৭০২।ইবনুল আসীর বলেন, «ليُغان على قلبي» এর অর্থ হচ্ছে, ঢাকা পড়ে যায়, পর্দাবৃত হয়ে যায়। উদ্দেশ্য ভুলে যাওয়া; কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা যিক্‌র, নৈকট্য ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকতেন। তাই যখন কোনো সময় এ ব্যাপারে সামান্যতম ব্যাঘাত ঘটত অথবা ভুলে যেতেন, তখনি তিনি এটাকে নিজের জন্য গুনাহ মনে করতেন, সাথে সাথে তিনি ইস্তেগফার বা তওবা করতেন।প্রতিদিন সায়্যিদুল ইসতিগফার পড়া।যে ব্যক্তি সকালবেলা অথবা সন্ধ্যাবেলা এটি (‘সায়্যিদুল ইসতিগফার’) অর্থ বুঝে দৃঢ় বিশ্বাসসহকারে পড়বে, সে ঐ দিন রাতে বা দিনে মারা গেলে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنوبَ إِلاَّ أَنْتَউচ্চারণ:“আল্লাহুম­্মা আনতা রব্বী, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানী ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আউযুবিকা মিন শার্ রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযামবী ফাগ্ ফির্ লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা”অর্থঃ হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া প্রকৃত এবাদতের যোগ্য কেউ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আর আমি তোমার গোলাম আর আমি সাধ্যমত তোমার সাথে কৃত অঙ্গীকারের উপর অবিচল রয়েছি। আমার কৃত-কর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমাকে যত নেয়ামত দিয়েছে সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করছি। যত অপরাধ করেছি সেগুলোও স্বীকার করছি। অতএব, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ, তুমি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।(বুখারী, ৭/১৫০, নং ৬৩০৬)উপরের উপদেশগুলো মেনে চলে, পর্ণোগ্রাফির মতো বর্বর পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলুন এবং তাওবা করে ফিরে আসুন আল্লাহ ক্ষমাশীল ।আল্লাহ আমাদের সকল ভা ও বোনদের কে মেনে চলার তৌফিক দান করুন আমিন।

Post a Comment

If you learn something from our post please comment...

 
Top