ব্রিটিশ যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিকের ডুবে যাওয়া এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজডুবির ঘটনা। ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জাহাজ টাইটানিক নিমজ্জিত হয়।
এই জাহাজে এমন রাজকীয় ব্যবস্থা ছিল যে, তার ভার বহন করাও সহজ কথা নয়। পাঠক চলুন জেনে নেই কী কী ছিল এই জাহাজে।
- ৮০৮২ ফিট ৯ ইঞ্চি লম্বা, ৯২ ফিট চওড়া, ১৭৫ ফিট উচ্চতা এবং ৪ কোটি ৬০ লক্ষ ৩২৮ টন ওজনের এই টাইটানিককে অধ্বংসাশী বলে মনে হতো। অর্থাৎ যাকে ধ্বংস করা যায় না বা ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
- যাত্রিরা কয়েক কিলোমিটার হাঁটাহাঁটি করতে পারতেন।
- এই জাহাজের চালক, নেভি অফিসার এবং ক্রুদের প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লেগেছিল জাহাজটির কোথায় কি আছে তা আয়ত্বে আনতে।
- এছাড়া জাহাজটির ধোয়া ছাড়ার জন্য ৪ টি চিমনি ছিল যেকোনো উচ্চতা ৮১.৫ ফুট ছিল। প্রত্যেকটির ওজন ছিল ৬০ টন।
- এই চিমনি গুলো 30 ডিগ্রি কোণে হেলিয়ে বানানো হয়েছিল। যাতে টাইটানিককে আরো স্টাইলিশ লাগে। সেই সময় এটিকে তৈরি করতে ৭.৫ মিলিয়ন ডলার লেগেছিল। যেটার 2021 সালের মূল্য হয় ১৮০ মিলিয়ন ডলার যেটা কিনা অনেক কম টাইটানিক সিনেমা তৈরির থেকে। ১৯৯৭ সালে টাইটানিক সিনেমাটি (Titanic movie) তৈরি করতে ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছিল।
- হারলেন ও উলফ শিপইয়ার্ড এই জাহাজটিকে তৈরি করবার জন্য ৩০০০ শ্রমিককে কাজে লাগিয়েছিল। সপ্তাহের ছয়দিন সকাল ৬:৩০ থেকে কাজ শুরু হতো এবং ২৬ মাসের মধ্যে জাহাজটির মনুমেন্টাল কাজ শেষ হয়ে যায়। এই জাহাজের কাজটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল কারণটা একটু ইমাজিন করলেই বোঝা যাবে।
- বিনা সুরক্ষায় শ্রমিকেরা 20 তলা উঁচু বিল্ডিং এর সমান উচ্চতায় শ্রমিকরা কাজ করতো। নির্মাণ কাজ চলার সময় 8 জন শ্রমিক প্রাণ হারায় ও ৪২৮ জন শ্রমিক আহত হন।
- ৮৮২ ফুট ৬ ইঞ্চি দীর্ঘ টাইটানিক তিনটি ফুটবল মাঠের সমান। ১৭৫ ফুট উঁচু জাহাজটিতে নয়টি ডেক ছিল।
- টাইটানিক এর ভেতরে হোটেলটা অনেক বিলাসবহুল করা হয়। বিশাল ঘুর্ণয়মান সিঁড়ি দিয়ে জাহাজের দশ তলার মধ্যে সাত তলাকে যুক্ত করে। এই জাহাজটি সুসজ্জিত ছিল বিভিন্ন পেইন্টিং, স্ট্যাচু এবং কাঠের পেনেল দ্বারা।
- ডুবে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ জাহাজটি ৩ হাজার ৩৩৯ জন যাত্রী এবং তাদের মালামাল নিয়ে ঘণ্টায় ২৭ মাইল
বেগে ছুটতে পারত।
বেগে ছুটতে পারত।
- টাইটানিকের আলোকসজ্জার জন্য ১০ হাজার বাল্ব সংযোজন করা হয়েছিল।
- ৩ হাজার শ্রমিকের ২ বছরের শ্রমে নির্মিত হয়েছিল টাইটানিক। নির্মাণব্যয় হয়েছে ৭.৫ মিলিয়ন ডলার।
- যাত্রী ও ক্রুদের খাওয়াতে টাইটানিকের দরকার হতো ৭৫ হাজার পাউন্ড ওজনের মাংস, ১১ হাজার পাউন্ড মাছ, ৪০ হাজার ডিম এবং প্রতিদিন ১৪ হাজার গ্যালন পানি।
- ডুবে যাওয়ার আগে জাহাজটিতে ৪০ মেট্রিক টন আলু, ৩ হাজার ৫০০ পাউন্ড পেঁয়াজ, ৩৬ হাজার আপেল এবং ১ হাজার পাউরুটি ছিল
টাইটানিক জাহাজের ডুবে যাওয়ার ইতিহাস
১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল তৎকালীন সবথেকে বড় জাহাজ আটলান্টিক সাগর বরফ ঠান্ডা জলে ১৫০০ টি প্রাণ নিয়ে সারা জীবনের জন্য নিয়ে যায় এবং একটি জলীয় কবরস্থান তৈরী করে। বিজ্ঞানীরা পুনরায় এই বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করেন এবং সেই সময়ের টাইটানিক নিয়ে রহস্য ১০০ বছর চাপা পড়েছিল। সে গুলোকে আবারো পুনরায় রিসার্চ করা হয় এবং বেরিয়ে আসে অবিশ্বাস্যকর তথ্য।
টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ কী ছিল, এ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। দেখা গেছে সাধারণ মানুষ শুধু ভাসমান বরফের সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে গেছে- এটা মানতে রাজি নন। অনেকে এটাও মনে করেন যে, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হারল্যান্ড অ্যান্ড ওলফের আত্ম অহংকারও এর একটা কারণ হতে পারে। তারা দম্ভ করে বলেছিল, 'টাইটানিক কখনো ডুববে না।
এত পরিশ্রম এত ত্যাগের বিনিময়ে বানানো টাইটানিক জাহাজ একটি বরফের কারণে ডুবে গেল???
জার্নালিস্ট সোলাম মোলনিক ৩০ ধরে টাইটানিকের সাথে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা নিয়ে গবেষণা করে গেছেন। তিনিই প্রথম টাইটানিক এর কিছু ছবি থেকে ৩০ ফুট এর কালো দাগ লক্ষ্য করেছিলেন। টাইটানিক জাহাজ কে ছাড়বার আগে কিছু ছবি থেকে এবং টাইটানিক তৈরির সময় এর কিছু ছবি থেকে এই স্পর্ট তিনি চিহ্নিত করেছেন। এই স্পর্টি ছিল জাহাজের ডেকের নিচের অংশে। সবচেয়ে বড় কথা হলো এত বড় একটি স্পট কেন কেউ লক্ষ্য করেনি।
এর কারণ জাহাজটির মুখ সমুদ্রের দিকে ছিল এবং পেছনের দিকটা ডকের দিকে ছিল এবং ওই দিক থেকে যাত্রী এবং বাকি সকলে ওঠা-নামা করবে। জাহাজটি অনেক লম্বা হওয়ায় কেউই সামনের স্পটটি পেছন থেকে লক্ষ্য করতে পারেনি। টাইটানিক এর যাত্রা শুরু করবার আগেই তিন সপ্তাহ ধরে জাহাজের এই কালো স্পট অংশটিতে আগুন ধরেছিল। তিন সপ্তাহ ধরে একটানা সেখানে আগুন জ্বলতে থাকে। যার কারণে সেখানকার ধাতুগুলো উচ্চতাপে গলতে শুরু করে। এর কারণে জাহাজটি অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বরফের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় এই পরিণতি হয়। এতবড় একটি জাহাজের ছোট্ট একটা ফুটো থাকলে কি চুরি হওয়ার কথা নয়, কিন্তু দুর্ভাগ্য এমনই যে বরফখণ্ড সেই আগুন লাগা অংশে আঘাত করে এবং সব শেষ হয়ে যায়।
জাহাজ ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এই আগুনের কথা আগে থেকেই জানতো এটাও জানত যে এরকম অবস্থায় সমুদ্রযাত্রার ফল কি রকম হতে পারে। জাহাজ কোম্পানির মালিকরা আগে থেকেই ব্যাংকের কাছ থেকে অনেক ঋণ নিয়েছিল এবং জাহাজটির সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও ওইদিনের সব জাহাজকে ক্যানসেল করা হয়েছিল কারণ সবাই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজের প্রথম যাত্রী হতে চেয়েছিল।
প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা ছিল। যেমন গরম জলের সুইমিং পুল, টেনিস খেলার কোট, একটি বিউটি সেলুন। প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য খাবারের মধ্যে ১৩ রকমের ধরন ছিল। প্রত্যেকটি খাবারের সঙ্গে আলাদা আলাদা ধরণের ওয়াইন দেয়া হতো। জাহাজে পনেরশো বোতল ওয়াইন 20 হাজার বোতল বিয়ার এবং ৮ হাজার সিগারেট নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত একটা দূরবীন নেয়া হয়েছিল না। একটিমাত্র দূরবীন টাইটানিক কে বাঁচাতে পারত, কারণ একটি দূরবীন দিয়ে দূরে বরফখণ্ড কে দেখা যেত এবং জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করা যেত।
এছাড়াও জাহাজের চালক জাহাজটি অনেক গতিতে চালাচ্ছিল। কারণ সে জানত এত বড় জাহাজ কোন কিছুতেই কিছু হবে না। কিন্তু যখন সে বরফখণ্ড টিকে লক্ষ করে তখন জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করার সুযোগ থাকে না। জাহাজটিতে আরো কম সংখ্যক লাইফবোট ছিল, জাহাজটির স্টাইল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা ভেবে জাহাজে কম সংখ্যক লাইভ বোর্ড রাখা হয়।
এছাড়াও জাহাজটি যখন ডুবতে শুরু করে তখন জাহাজের ক্রু মেম্বাররা সাহায্যের জন্য বাজির সাহায্যে সিগন্যাল পাঠাতে থাকে। কিছুদূর দূরে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া নামের জাহাজটির ক্যাপ্টেন ওই সিগন্যাল উপেক্ষা করে। এরপর যখন এই ঘটনাটি সামনে আসে তখন ওই ক্যাপ্টেন কে সাসপেন্ড করে দেয়া হয়। কারণ সেদিন যদি তিনি সাহায্য করতে যেতেন তাহলে এতগুলো প্রাণ সাগরের হারিয়ে যেত না।
ইংল্যান্ডের লিভারপুল ডকে জাহাজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। উষ্ণ জলের একটি সুইমিং পুল, একটি জিমনেসিয়াম, দুটো পাঠাগার, টেনিস খেলার মাঠ, বাগানসহ বিলাসিতার যাবতীয় উপকরণ জাহাজটিতে ছিল। জাহাজটি সম্পর্কে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হারল্যান্ড অ্যান্ড ওলফ থেকে বলা হয়েছিল, 'টাইটানিক আনসিংকেবল' অর্থাৎ টাইটানিক কখনো ডুববে না। অথচ ৪৬ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই বিশাল জাহাজ প্রথম যাত্রাতেই সবাইকে হতবাক করে দুর্ভাগ্যক্রমে ডুবে যায়।
১৯১১ সালের ৩১ মে টাইটানিক প্রথম সমুদ্রে ভাসানো হয়। এ দৃশ্য দেখতে সে সময় প্রায় ১ লাখ লোক জড়ো হয়েছিল। ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল ক্যাপ্টেন অ্যাডওয়ার্ড জন স্মিথের নেতৃত্বে জাহাজটি নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে ১৪ এপ্রিল রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নিউফাউন্ডল্যান্ড দ্বীপের কাছে জাহাজটির সঙ্গে ভাসমান হিমশৈলির ধাক্কা লাগে। এতে জাহাজে ৩০০ ফুট আয়তনের এক বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানিরোধক অনেক কামরা পানিতে ভরে যায়।
এর মাত্র ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর জাহাজটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় ১ হাজার ৫১৭ জন যাত্রী ও ক্রু ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড উষ্ণতার সমুদ্রজলে অসহায় অবস্থায় প্রাণ হারান।
এছাড়াও ডুবে যাওয়ার অন্য ইতিহাস
অনেকের ধারণা ছিলো টাইটানিকে নাকি কোন অভিশাপ ছিলো। অনেকের মতে কোনদিনও নাকি টাইটানিক ডুববে না। কিন্তু সেটি কি ভাবে ডুবে গেলো সেই রহস্যময় কাহিনীটার কারণ অনুসন্ধান করতে থাকে বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ। ১৯৯৮ সালের ১৯ অক্টোবরে টাইমস জানিয়েছে, এরকমই এক রহস্যময় কাহিনী। তিনি বলেছেন- আমেন বা আমেন রা নামের মিসরীয় এক রাজকুমরীর অভিশপ্ত মমি ছিলো ঐ টাইটানিকে। তাই বলা হয়- সেই মমির অভিশাপেই নাকি টাইটানিক বরফের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়।
খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে মারা যায় “প্রিন্সেস অব আমেন রা। তার সমাধি ছিলো ল্যুক্সরে। নীল নদের পাশেই ল্যুক্সরে তার সৎকার করা হয়। উনিশ শতকের নব্বই শতকের শেষ দিকে চার জন ইংরেজকে ওই রাজকুমারীর মৃতদেহসহ একটি মমি কেনার জন্য আহ্বান করে। উৎসাহী ইংরেজদের একজন নয় প্রায় বেশ কয়েকজন নাকি মৃতদেহটি হাজার পাউন্ডের বিনিময় বিক্রেতার কাছ থেকে কিনে নেয়। সেটিকে নিয়ে আসে তাদের হোটেলে। কয়েক ঘণ্টা পর মরুভূমির দিকে হাটতে দেখা যা ক্রেতা সেই মানুষটিকে। কিন্তু সেই মানুষটিকে আর ফিরে পাওয়া যায়নি।
পরের দিন এক ইংরেজ এক মিশরীয় ভৃত্য কর্তৃক গুলিবিদ্ধি হয়। তিনি এমন ভাবে আহত হয় শেষ পর্যন্ত তার হাত কেটে ফেলতে হয়। এরপর আমেন রা তৃতীয় মানুষটির হাতে পরে কিন্তু সেই মানুষটির জমানো সব অর্থ লোপাট হয়ে যায় একেবারে সে নি:স্ব হয়ে যায় পরে। সে রাস্তায় রাস্তায় দিয়াশলাই বিক্রি করে খদ্যা নির্বাহ করতো এই মমির অভিশাপে। এতো ঝামেলার মধ্যেও মমিটি পৌঁছে যায় ইংল্যান্ডে। তবুও তার অভিশপ্ত পর্বটা শেষ হয়নি। ওর সাথে জড়িত প্রত্যেকটি মানুষের ভাগ্যে জুটেছে কোনো না কোনো দূর্ঘটনা বা অপমৃত্যু।
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে প্রদর্শনের সময় একজন দর্শনার্থী পরেন চমর দুর্দশায়। সে ছিলো একজন মহিলা ঐ মমিটির মুখচ্ছবি তার গায়ের কাপুর দিয়ে মুছে দিয়েছিলোন কারণ ওটাতে একটু ময়লা পরেছিলো। কিন্তু সেই মহিলার কয়েদিন পরই তার ছেলে হাম রোগে মারা যায়। এরপর মিউজিয়ামের কর্তৃপক্ষ মমিটিকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যখন মমিটি সরানোর জন্য কিছু মানুষ কাজ করতে দেওয়া হলো তাদের মধ্যে একজন কয়েদিনের মধ্যে বিষন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং ঐ কাজের তত্বাবধায়ককে তার অফিসের ডেস্কের উপর মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই বিষয়টি যখননি সবার নজরে আসে তখন সংবাদপত্রের ও নজরে আসে। জানা যায় যে এক ফটো-সংবাদিক মমিটির ছবি তুলে ডেভেলপ করে দেখতে পায় রাজকুমারীর বীভৎস চেহারা। এরপর খবর আছে ঐ সংবাদিক নাকি গুলি করে আত্মহত্যা করে।
প্রায় দশ বছর পর্যন্ত ঘটতে থাকে এই ধরণের ঘটনা। এরপর সর্বশেষ মমিটিকে বিক্রি করে একজন সৌখিন সংগ্রাহকের কাছে। বিভিন্ন ধরণের দুর্ভাগ্যজনক বিপদের মুখোমুখি হয়ে মমিটিকে তিনি নির্বাসন দেন, নিজ বাড়ির চিলেকোঠায়। এরপর একজন মার্কিন প্রত্মতত্ববিদ কিনে নেয় মিশরীয় এই রাজকুমারীর মমিটি। আর সেই মার্কিন প্রত্মতত্ববিদই মমিটিকে নিয়ে উঠে পরেন টাইটানিক জাহাজে। তাই অনেকেই মনে করে এই অভিশপ্ত মমির কারণেই নাকি টাইটানিক জাহাজ ডুবেছে। এবং এটাই অনেকের বিশ্বাস।
টাইটানিক জাহাজের বর্তমান অবস্থা
ঘটনার ৭৪ বছর পর ১৯৮৬ সালের ১৪ জুলাই টাইটানিক পুনরাবিষ্কৃত হয়।
সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার ৭৪ বছর পর টাইটানিক পুনরাবিষ্কার হয়। বহু চেষ্টার পর ১৯৮৫ সালে আটলান্টিকের অতলে টাইটানিকের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সমু্দ্রেভূ-পৃষ্ঠা হতে প্রায় ১২৪৬৭ ফুট বা ৩৮০০ মিটার নিচে সমাহিত হয়ে আছে বিশ্বের স্বপ্নের টাইটানিক, হয়তো চিরদিনই থাকবে ওখানে। এরপর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৬০০ ফুট নিচে 'আনসিংকেবল টাইটানিক'র অবস্থান শনাক্ত করা হয়। দেখা যায় দ্বিখণ্ডিত জাহাজটির দুটো টুকরো ১ হাজার ৯৭০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। এবং জাহাজের সম্মুখভাগ সমুদ্রতলে ৬০ ফুট মাটির গভীরে প্রোথিত হয়ে আছে।
কিন্তু পৃথিবীর মানুষের কাছে আজো টাইটানিক চিরকালই রহস্যের আড়ালে রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্নভাবে গবেষণার জন্য এখনো এটা নিয়ে অনুসন্ধান করে যাচ্ছেন। বিজ্ঞানীদের ভাষ্যানুযায়ী বলা হচ্ছে যে- পানি আর বরফের প্রকোপে ডুবে থাকা টাইটানিক ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করে টাইটানিকের অবস্থা যদি এইভাবে চলতে থাকে তাহলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে টাইটানিক সাগরের বুকে নিশ্চিহৃ হয়ে যাবে।
Post a Comment
If you learn something from our post please comment...